ফাঁস করেই সবাই পাশ করে?

বেলা এগারোটা বাজে, ১ঃ৩০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে আমাকে। ছোট ছেলেটা এ বছর PSC (সমাপনী) পরীক্ষা দিচ্ছে। মিরপুর স্টেডিয়ামের সামনে ফুটপাত ধরে হাটছি, রাগে গা জ্বলছে, মাথাটা ঝিমঝিম করছে। মনে মনে ভাবছি এতো অধঃপতন মনুষ্য প্রজাতির হয় কি করে?

পরীক্ষা হলের সামনে কিছুক্ষন ছিলাম। অনেকেই প্রশ্নবানে আমাকে জর্জরিত করছেন,

প্রশ্নের ধরনটা এমনঃ- "দিদি প্রশ্ন পেয়েছেন?" "দিদি ইন্টারনেট থেকে প্রশ্ন নামাইছেন"

আমার একটাই জবাব ছিল "না"। এই না  শুনে পুরান বালতির তলার মত মুখ করে দাদা/দিদিরা প্রস্তান। এই দাদা/দিদিরা খুব ভাল করেই জানেন, আমার ইন্টারনেটের একটি ক্ষেত আছে, গাছে ঝারা দিলেই ঝরঝর করে প্রশ্ন পড়বে।

আমার প্রথম জন্মদিন

আজ আমার জন্মদিন, ছোট বেলা তেমন ঘটা করে কাউকে জন্মদিন পালন করতে দেখিনি, তাই মনে কোন আফসোসও ছিল না। তবে হ্যা আমার মা কিন্ত ঠিক মনে রাখতেন দিনটি। আমাকে না জানিয়ে শহর থেকে ছিট কাপড় আনাতেন। রাতে বসে বসে নিজ হাতে ফ্রক সেলাই করতেন, আবার কুর্শিকাঠা দিয়ে লেস বানিয়ে তা ফ্রকে লাগিয়ে দিতেন।

ঐ দিনটি শুধু মনে রাখার জন্যই এই আয়োজন টুকু। মিষ্টান্ন, পিঠা, পায়েস, আর একটু উন্নত মানের খাবার এই ছিল জন্মদিন।

ঘুম থেকে উঠে দেখি বিছানার চাদর আড়াআড়ি ভাবে আধা ফুট পরিমানে কাটা। বিষয় জানতে চাইলে, দেখি হাসতে হাসতে মা লুটোপুটি খাচ্ছেন। আমি নাকি ঘুমের মধ্যে চোখ খুলে ফেলেছি, তাই বে-খেয়ালে জামার সাথে চাদরও কাটা পড়েছে। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ছিট কাপড়ের একদিক সোজা অন্য দিক উলটা সেলাই হয়ে গেছে, তা আবার খুলে ঠিক করতে হচ্ছে। ছোট বেলার সেই দিন গুলি খুব মিস করেছি। বড় বেলায় বহু কাল জন্মদিনে মাকে আর পাইনি।

আমার বাল্যবন্ধু

আজ কাল আমার বাল্যবন্ধুটিকে খুব মনে পড়ছে যে ছিল আমার নিত্য দিনের সহচর এবং খেলার সাথী। আমার মা'ই ওকে লালন-পালন করেছিলেন।

আমি যখন দুদ্ধপোষ্য শিশু, আমার মা তখন ভগ্নস্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য হেকিমি ঔষধ সারিবাদী সালসা সেবন করতেন। ফলে মায়ের দুধ একেবারেই শুকিয়ে গেল। মা আমাকে নিয়ে পড়লেন বিপাকে, নতুন মা আবার আরো একটি শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন সেচ্ছায়। সেই থেকে আমার আর ওর গরুর দুধ এবং কৌটা মায়ের দুধই হলো শেষ ভরসা।

আমার এখনো মনে আছে, সেই যে মজা পেয়ে গেলাম গ্লাস্কো মিল্ক, অস্টার মিল্ক, লেট্রোজেন এবং আরো কত কি ছিল। তখন কাঁচের ফিডার ছিল, দু'দিকে নিপল। দুধ বাসি হলে কিংবা অর্ধেক খাওয়া রেখে গেলে সেটা অন্য আরেকটা ফিডারে ভরে ওকে খাইয়ে দিতেন। এই খাবারে তার পেট ভরে না, মার পিছু পিছু ঘুরতো। মা ভাতের মাড় রেখে দিতেন ওর জন্য। এভাবে আমি ৬ বছরে পা দিলাম, নিজেই দুধ বানিয়ে ফিডারে ভরে সারাবাড়ী হাটি আর খাই। আমরা দুজনই দুধ ছেড়ে ভাত ধরলাম। ও ছিল ছেলে, আমার সাথে পাল্লা দিয়ে বড় হচ্ছে সে। ওর মা ছিল না আমার মাকেই ওর মা ভাবতো। মা আমাদের দুজনকে একটা বিস্কুট হলে ভাগ করে দিতেন। ও সব সময় আমার সাথেই থাকত। মা আদর করে নাম রেখেছিলেন "বুলু''।

বুলুর মা কিভাবে মারা গেলেন? বলছি,