কবরে থেকেও শরীর অক্ষত

যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই লোকমুখে শুনে আসছি, আমার দাদাজানের বাবা পীরে কামেল সৈয়দ নূর আলী নকশেবন্দী সাহেবের মৃত দেহের কথা। উনার স্ত্রীর কবর খনন করার সময় কোদালের কোপ লাগে তার মৃত দেহের হাটুর ওপর। এরপর ফিনকি দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হতে লাগল। এ ঘটনা দেখে যে কবর খুড়ছিল সে অজ্ঞান হয়ে যায়। তার মুরীদরা (শিস্য) বলতে থাকে যে উনি অনেক কামেল লোক এজন্যই উনার লাশটি পচেনি। কিন্তু আমি কোনভাবেই কথাটা বিশ্বাস করতে পারিনি। আমার কাছে ব্যপারটা সত্য মিথ্যার মাঝামাঝি (Myth) হয়েই রয়ে গেল। কারন আমি কোন কিছুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা না পেলে তা বিশ্বাস করিনা। মুরিদরা হয়তো অতিরিক্ত ভক্তির কারনে একটা গল্প বানিয়েছে। কিছুদিন হল আমি এর সমাধান পেয়েছি।



শুনুন তাহলে...


বৈজ্ঞানিক ভাষায় এই ব্যাপারটার নাম "সাবানায়ন" (Sapponification) সাধারনতঃ মৃত দেহে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমনের কারনেই পচন প্রক্রিয়া শুরু হয়। অনেক গভীর গর্তে/কবরে অথবা ভাসমান অবস্থায় পচনের পরিবর্তে দেহ থেকে এক ধরনের মোমের মত পদার্থ বের হয়। এটি পানির চেয়ে হালকা। এ অবস্থায় মৃত দেহ ২০ বছরেরও বেশি সময় পর্যন্ত অবিকৃত অবস্থায় থাকতে পারে।

আমার হিসাব মিলে গেল। পীর সাহেবের স্ত্রীর মৃত্যু উনি ইন্তেকালের ২৩ বছর পরে হয়। আমাদের পারিবারিক কবরস্থানে যদিও কবর পাকা করার কোন নিয়ম নেই তবুও শুধুমাত্র উনার জন্য পাকা করতে হল। যেন আবার কখনো এই ঘটনা না ঘটে।


No comments:

Post a Comment